🧑‍⚕️ বাংলাদেশে ফিজিওথেরাপি: বর্তমান অবস্থা, চ্যালেঞ্জ ও ভবিষ্যৎ

 
🌍 বিশ্ব ফিজিওথেরাপি দিবস – ৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫
৮ সেপ্টেম্বর পালিত হয় World Physiotherapy Day বা বিশ্ব ফিজিওথেরাপি দিবস
এটি ১৯৯৬ সাল থেকে বিশ্বব্যাপী পালিত হয়ে আসছে, যা প্রতিষ্ঠা করেছে World Physiotherapy (পূর্বে WCPT)







🏷️ এবারের প্রতিপাদ্য বিষয় (Theme 2025)
“The role of physiotherapy and physical activity in healthy ageing, with a focused look at preventing frailty and falls.”
👉 অর্থাৎ—
“স্বাস্থ্যকর বার্ধক্য – বৃদ্ধ বয়সে সক্রিয় থাকার ক্ষেত্রে ফিজিওথেরাপি ও শারীরিক কার্যকলাপের ভূমিকা, বিশেষ করে দুর্বলতা ও পড়ে যাওয়ার প্রতিরোধ।”


🇧🇩 বাংলাদেশে ফিজিওথেরাপির বর্তমান অবস্থা
🎓 শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ
বাংলাদেশে বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান থেকে BPT (Bachelor of Physiotherapy) ডিগ্রি প্রদান করা হয়। এর মধ্যে রয়েছে—

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
Gono University
NITOR
BHPI
রাজশাহী IHT
ডিএমইউ সহ আরও কিছু প্রতিষ্ঠান
এছাড়া:
Gono University-তে MPT (Clinical Physiotherapy)
BHPI-তে MSc.Pt. (Non-clinical)
ঢাকা ওপেন ইউনিভার্সিটিতে MDMR (Master in Disability Management and Rehabilitation) চালু আছে।
🏛️ সংগঠন ও নিয়ন্ত্রণ
Bangladesh Physiotherapy Association (BPA): ফিজিওথেরাপিস্টদের ট্রেড সংগঠন, ২০০৭ সাল থেকে World Physiotherapy-র সদস্য।
Bangladesh Rehabilitation Council (BRC): ২০১৮ সালের আইন অনুযায়ী প্রতিষ্ঠিত নিয়ন্ত্রক সংস্থা, যা শিক্ষা, প্রশিক্ষণ ও প্র্যাকটিস নিয়ন্ত্রণ করে।
📉 চ্যালেঞ্জ
যদিও শিক্ষা কার্যক্রম চালু আছে, তবুও:
সরকারি হাসপাতালে ফিজিওথেরাপিস্টদের পদসংখ্যা খুব সীমিত।
পেশাগত স্বাধীনতা ও পূর্ণ স্বীকৃতি এখনো আসেনি।
মান নিয়ন্ত্রণ ও জনসচেতনতা অনেক পিছিয়ে।

🌐 বিশ্বব্যাপী ফিজিওথেরাপির অবস্থা

উন্নত দেশগুলোতে (যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, ইউরোপ):

ফিজিওথেরাপি একটি স্বাধীন ও পূর্ণাঙ্গ স্বাস্থ্যসেবা পেশা।
রোগীরা সরাসরি (Direct Access) ফিজিওথেরাপিস্টের কাছে যেতে পারে।
উচ্চমানের প্রশিক্ষণ, লাইসেন্সিং ও ক্লিনিকাল স্বাধীনতা বিদ্যমান।

এশিয়া ও উন্নয়নশীল দেশগুলোতে (চীন, জাপান, তাইওয়ান):

শিক্ষা ও নিয়ন্ত্রিত প্র্যাকটিস শক্তিশালী।
বাংলাদেশসহ কিছু দেশে এখনো পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ ও প্রাতিষ্ঠানিক স্বীকৃতি পুরোপুরি কার্যকর হয়নি।

❌ সঠিক ফিজিওথেরাপির অভাবে বাংলাদেশের জনগণের উপর প্রভাব

অক্ষমতা বৃদ্ধি

স্ট্রোক, আঘাত বা অস্ত্রোপচারের পর রোগীরা স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে ব্যর্থ হয়।

অতিরিক্ত স্বাস্থ্য ব্যয়

ওষুধ ও সার্জারির উপর নির্ভরতা বেড়ে যায়, যা অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিকর।

দীর্ঘমেয়াদি অসামর্থ্য ও মানসিক সমস্যা

পুনর্বাসনের অভাবে রোগীরা হতাশা ও সামাজিক বিচ্ছিন্নতায় ভোগে।

ভুল চিকিৎসার ঝুঁকি

প্রশিক্ষণবিহীন ব্যক্তির কাছে গেলে ক্ষতির সম্ভাবনা থাকে।

অর্থনীতি ও সমাজে চাপ

কর্মক্ষম জনগোষ্ঠী কমে যায়, জাতীয় উৎপাদনশীলতা ও অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

✅ সারকথা:
বাংলাদেশে ফিজিওথেরাপি শিক্ষাগতভাবে প্রতিষ্ঠিত হলেও পেশাগত স্বীকৃতি ও জনসচেতনতায় আরও অনেক পথ পাড়ি দিতে হবে। সঠিক নীতি, নিয়ন্ত্রণ এবং জনসচেতনতা ছাড়া দেশের বিশাল জনগোষ্ঠী প্রয়োজনীয় পুনর্বাসন ও অক্ষমতা প্রতিরোধ থেকে বঞ্চিত হবে।

1 Comments